ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে যে কোনো সংস্করণে একচেটিয়া আধিপত্য সবসময় প্রত্যাশিত বাংলাদেশের জন্য। কিন্তু তেমন দাপুটে পারফরম্যান্স করতে পারেনি নাজমুল হোসেন শান্তর দল। সিরিজ জিতলেও বেশ কিছু জায়গায় রয়ে গেছে প্রশ্নের সুযোগ। তবে সেসব দিকে না গিয়ে বরং নিজেদের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সফল হওয়ায় সন্তুষ্টির কথা বললেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
চট্টগ্রামে প্রথম তিন ম্যাচ জিতেই সিরিজের ট্রফি নিশ্চিত করে ফেলেছিল স্বাগতিকরা। পরে মিরপুরে চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতেও জয় নিয়েই মাঠে ছাড়ে তারা। কিন্তু প্রতি ম্যাচেই পরাজয়ের ব্যবধান কমায় জিম্বাবুয়ে। শেষ পর্যন্ত সিরিজের শেষ ম্যাচ বড় ব্যবধানে জিতে হোয়াইটওয়াশ এড়াতে পারে তারা।
সিরিজের ফল বাংলাদেশের পক্ষে ৪-১ হলেও, তেমন দাপট দেখাতে পারেনি তারা। প্রত্যাশার প্রতিফলন পড়েনি কোনো ম্যাচের পারফরম্যান্সেই। সামগ্রিকভাবে বোলাররা বড় অবদান রাখলেও প্রতি ম্যাচেই কিছু ঘাটতি ছিল তাদের পারফরম্যান্সেও। বিশেষ করে নিয়মিতই শেষ দিকে জিম্বাবুয়ে গড়ে উল্লেখযোগ্য কিছু জুটি।
শেষটিতে জিম্বাবুয়ে একরকম উড়িয়েই দেয় বাংলাদেশকে। ব্রায়ান বেনেট ও সিকান্দার রাজার ৭০ ছোঁয়া দুটি ইনিংসে অনায়াস জয়ই পায় সফরকারীরা। পঞ্চম টি-টোয়েন্টির পারফরম্যান্সে বলা চলে, বাংলাদেশের পারফরম্যান্সে যে দাপট প্রত্যাশিত ছিল, সেটি যেন দেখা গেল জিম্বাবুয়ের খেলায়।
আগের চার ম্যাচ জিতলেও সামনের বিশ্বকাপে বড় আশা দেখার মতো কিছুই করতে পারেনি বাংলাদেশ। ব্যাটসম্যানদের নেই তেমন বড় কোনো ইনিংস। পাঁচ ম্যাচ মিলিয়ে ফিফটিই মোটে ৪টি। বোলাররাও ভিন্ন ভিন্ন পর্যায়ে করেন ছন্নছাড়া বোলিং।
এর মধ্যেই অবশ্য ইতিবাচক দিক খুঁজে নিয়েছেন শান্ত। সিরিজ শেষে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক বললেন, নিজেদের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ভালো ফল মিলেছে।
“আমার মনে হয় যে, খুব ভালো একটা সিরিজ গিয়েছে। সিরিজ জিতলে অবশ্যই আত্মবিশ্বাস বাড়ে। তৃপ্তির জায়গা এটা বলব যে, আমরা যে পরীক্ষাগুলো করেছিলাম, যে জিনিসগুলো দেখার দরকার ছিল, যেমন আমরা ‘ক্লোজ’ ম্যাচ জিতেছি। টপ-অর্ডাররা একটা ম্যাচে খুব ভালো শুরু এনে দিয়েছে।”
“আজকের ম্যাচ যদি দেখেন, মিডল-অর্ডার একটু ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়েছে। এরকম বেশ কিছু জায়গা আছে। রিশাদ পুরো সিরিজে আমার মনে হয় খুব ভালো বোলিং করেছে। এই রকম যদি চিন্তা করা যায় তাহলে অবশ্যই অনেক ইতিবাচক দিক আছে এবং আমরা যে জিনিসগুলো আশা করেছিলাম, কাছাকাছি যেতে পেরেছি।”
পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কিছু বিষয় বিস্তারিতভাবেই তুলে ধরেন শান্ত। কোন জায়গায় তারা কাছাকাছি যেতে পেরেছেন, সেটিও বলেন তিনি।
“স্পিনাররা খুব ভালো করেছে। বিশেষ করে রিশাদ খুবই ভালো বোলিং করেছে। শেখ মেহেদি ভালো বল করেছে। মাঝখানে ওকে বিশ্রাম দিয়ে তানভিরকে খেলানো হয়েছে। সেও ভালো করেছে। এই জিনিসগুলো ভালো ছিল।”
“পাশাপাশি জাকের আলি আজকের ইনিংসটা বা মাঝখানের একটা ইনিংস, ওখানেও চেষ্টা করেছে যেটা জানে সেটা মাঠে দেওয়ার। ছোট ছোট বেশ কিছু জায়গা আছে, যেখানে আমরা কাছাকাছি যেতে পেরেছি। তবে এখনও অবশ্যই আরও উন্নতির জায়গা আছে। ক্রিকেটাররা সবাই আত্মবিশ্বাসী।”
সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে রান তাড়া করে জেতে বাংলাদেশ। পরের দুই ম্যাচের জয় ৯ ও ৫ রানে। ওই দুইটিতে এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল, ম্যাচ জিতে যেতে পারে জিম্বাবুয়েও। তবে শেষ পর্যন্ত বোলিং নৈপুণ্যে ফল নিজেদের পক্ষে রাখে স্বাগতিকরা।
বিশ্বকাপের আগে জমে ওঠা ম্যাচে জয় নিয়ে বের হওয়ার অভ্যাস সামনের দিনগুলোতে কাজে লাগবে মনে করেন শান্ত।
“কয়েকটা ক্লোজ ম্যাচ আমরা জিতেছি। যেটা আমাদের দরকার ছিল। কারণ সামনের সিরিজ বা টুর্নামেন্টে এই ধরনের ম্যাচ আসবে। তো ওই সময় কীভাবে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছি, বোলাররা কিভাবে পরিকল্পনা কাজে লাগাচ্ছে, ওই সময়ে আমরা কতটুকু শান্ত থাকছি, এই জিনিসগুলো আমরা অনুশীলন করছি।”
“ক্লোজ ম্যাচ যেগুলো আমরা খেলেছি, বলা যেতে পারে ওদের হাতে ম্যাচটা ছিল একটা সময়। সে জায়গা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে যেভাবে আমরা ম্যাচ বের করে এনেছি, এটা ইতিবাচক দিক। এই জিনিসটা আমাদের কাজে দিবে টুর্নামেন্টে।”
মন্তব্য করুন