নিজস্ব প্রতিবেদক,মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্য দিনদিন বেড়েই চলেছে। ঔষধ কোম্পানির নাছোড়বান্দা প্রতিনিধিদের চাপে ডাক্তারদের চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র তাদের দেখাতে বাধ্য হচ্ছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। এতে রোগীদের গোপনীয়তা রক্ষা হচ্ছে না।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং যথাযথ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্য দিনদিন বেড়েই চলেছে। এতে হাসপাতালে চিকিৎসার পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে।
সাংবাদিকের পরিচয় গোপন রেখে গত সোমবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে ২ ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে দেখা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির সামনে জটলা বেঁধে দাঁড়িয়ে আছে ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা। তাদের কারো কাঁধে ব্যাগ ঝোলানো, কারো হাতে ব্রিফকেস এবং ডাক্তারদের জন্য আনা নানা রকমের উপহার সামগ্রী। রোগী বা স্বজনরা হাসপাতাল থেকে বেড়িয়ে আসা মাত্রই হাতে থাকা ঔষধ লেখা ব্যবস্থাপত্র টান দিয়ে নিয়ে ছবি তোলার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ছে সবাই। এতে রোগী ও তার স্বজনরা ভোগান্তি পোহাচ্ছে। হাসপাতালটির পেছনে গেলে দেখা যায়, তারা তাদের সাথে থাকা মোটরসাইকেল রেখে এমনভাবে জটলা বানিয়েছেন যা দূর থেকে দেখলে মনে হবে মোটরসাইকেলের গ্যারেজ।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার এবং ওয়ার্ড বয় থেকে শুরু করে কর্মচারীদের সঙ্গে ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের গভীর সখ্যতা রয়েছে। কোনো রোগী ও তাদের স্বজনরা ডাক্তারদের চেম্বার থেকে বের হতেই তাদের ঘিরে ধরে মেডিক্যাল রিপ্রেজেনটেটিভরা। আমরা যারা রোগী আমাদের পার্সোনালিটি আছে বিশেষ করে নারী রোগীদের। এখানে নারী রোগীদের গোপনীয়তা বলতে কিছুই নেই বলে জানান অনেকে। এগুলো কর্তৃপক্ষ দেখে না। কারণ ঔষধ কোম্পানি থেকে মাসে ভাতা পায় ডাক্তাররা। তাই তারা তাদের কিছু বলে না। বলতে গেলে ভাতা বন্ধ হয়ে যাবে -এমনটাই জানান নাম বলতে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের কাছ থেকে মাসিক মাসোহারা ও উপহার সামগ্রী নিয়ে ডাক্তাররা ঔষধ লিখে থাকেন বলেও অভিযোগ উঠেছে এ সরকারি হাসপাতালটির ডাক্তারদের বিরুদ্ধে। এছাড়াও নানা অনিয়ম রয়েছে হাসপাতালটিতে। এতে করে অন্যত্র জেলা সদর হাসপাতাল অথবা বেসরকারী প্রাইভেট হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে রোগীদের।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. প্রণয় মান্না দাস বলেন, এই বিষয়টা সম্পূর্ণ বেআইনি ও নিষিদ্ধ। আমরা কোম্পানিগুলোকে নিষেধ করে দিয়েছি তাদের এই ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকতে। নির্দেশনা না মানলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন